
ঈদের কেনাকাটা করার কথা ভাবছেন? এখন যেকোন কেনাকাটার কথা ভাবলেই ‘অনলাইন নাকি অফলাইন’ বিষয়টা মাথায় চলে আসে। কেনই বা আসবেনা! কয়েক বছর আগেও দেশে মানুষের জীবন যাপন এতোটা উন্নত ছিল না। কিন্ত এখন অস্বীকার করার উপায় নেই যে, হাজারো সমস্যার ভীড়ে আমাদের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে বহুগুণ। অফলাইনের পাশাপাশি এখন আমরা অনলাইন কেনাকাটাতেও অভ্যস্ত।
অবশ্য, সময় সচেতন এবং সৌখিন অনেকের কাছে এখন অনলাইন কেনাকাটাই প্রথম পছন্দ হিসেবে বিবেচিত। সরাসরি মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা অর্থাৎ অফলাইন কেনাকাটা এখন ব্যস্ততম শহরের সময় সচেতন মানুষগুলোর কাছে বিরক্তিকর এক বিষয়। তাই জীবনকে সহজ আর দ্রুত করার মাধ্যম হিসেবে অনলাইন শপিং -এর জনপ্রিয়তা এখন চোখে পড়ার মত।
বছরঘুরে আবারো চলে এসেছে ঈদ। মুসলমানদের সবথেকে আনন্দের উৎসব হল বছরের দুটি ঈদ। তাই, ঈদের আগে নতুন পোষাক, ঘরের নতুন জিনিসপাতি কিংবা প্রিয়জনকে দেওয়ার জন্য গিফট কেনার কাজ করতে হয় আমাদের ব্যস্ততার মাঝেই। আশেপাশের প্রতিটি শপিং মল, ব্র্যান্ড শপ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাবে মানুষের ঢলে। সাথে লম্বা সময়ের ট্র্যাফিক জ্যামের ঝামেলা তো আছেই। এর ফলে আনন্দের কেনাকাটার কাজটিও প্রচন্ড রকমের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় আমাদের কাছে। আর এই ঝক্কিঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে পারেন অনলাইনে। শত শত অনলাইন শপিং সাইটে হাজার হাজার সাজানো প্রোডাক্ট থেকে দু-চার ক্লিকেই সেরে ফেলুন আপনার ঈদের কেনাকাটা। সেটাও আবার সম্পূর্ণ বাড়িতে বা অফিসে বসে। পেমেন্টের জন্য রয়েছে ডিজিটাল সব ওয়ালেট ব্যবহারের সুবিধা। আর হোম ডেলিভারি সুবিধা তো থাকছেই। তাই আপনার ঈদের কেনাকাটা হয়ে উঠবে আরও সহজ এবং আনন্দপূর্ণ।
ঈদ শপিং? অনলাইন নাকি অফলাইন?
অনলাইন শপিং এখন কেনাকাটার জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠলেও তা নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণীর মানুষের মাঝেই সীমাবদ্ধ আছে। ঢাকার মতো ব্যস্ততম শহরগুলো বাদে অন্য সাধারন শহর কিংবা গ্রামগুলোতে এখনও অনলাইন শপিং -এর আধুনিকতা ছুঁতে পারেনি। অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারনার অভিজ্ঞতার কারণে অনেকে সাধারন মানুষ অনলাইন শপিং থেকে বিমুখ। জেলা শহরগুলোতে মানুষ এখনও মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করার প্রচলন থেকেও সরে আসতে পারেনি। যদিও সারাদেশেই তরুণ প্রজন্মের কাছে অনলাইন শপিং গ্রহনযোগ্য একটি মাধ্যম। তাই সবমিলিয়ে, বেশিরভাগ মানুষ কেনাকাটার ক্ষেত্রে দ্বিধা দ্বন্দে পড়ে যায়, ‘অনলাইন নাকি অফলাইন’। এমন প্রশ্নের উত্তরে বলতে হবে, দুটো মাধ্যমেই কিছু সুবিধা-অসুবিধা আছে। সেখানে ঈদ শপিং এর ক্ষেত্রে এই দ্বিধা আরও বেশি প্রখর।
অনলাইন কেনাকাটার সুবিধা-অসুবিধা
অনলাইন মানেই ঘরে বসে হাজার হাজার প্রোডাক্টকে হাতের মুঠোয় পাওয়া। হাজার বললেও ভুল হবে হয়ত! কারণ, অনলাইনে শপিং করার জন্য সারা বিশ্বের শপিং সাইটগুলো উন্মুক্ত। তাই হাজারের বদল লাখ বললেও খুব একটা ভুল হবেনা। কেনাকাটার ক্ষেত্রে অনেক প্রোডাক্ট দেখে শুনে নিতেই আমরা বেশি পছন্দ করি। সেক্ষেত্রে অনলাইনে লাখ লাখ প্রোডাক্ট দেখে পছন্দের প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করা সম্ভব। সেটাও আবার সম্পূর্ণ ঘরে বসে। অন্যদিকে, পেমেন্ট করার ক্ষেত্রেও মোটামুটি সব ধরনের ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবহার করার সুবিধা পাবেন। আর, আপনার কেনা প্রোডাক্টগুলো ডেলিভারি পেয়ে যাবেন আপনার দোরগোড়ায়। অর্থাৎ, যে ব্র্যান্ডের প্রোডাক্টটি আপনার শহরে নেই সেটিও চাইলে আপনি আপনার ঘরে বসেই পেয়ে যাচ্ছেন খুব সহজেই। ডিসকাউন্টের কথা না বললেই নয়! অনলাইনে ঈদের মতো যেকোন উৎসবে উপভোগ করতে পারবেন অবিশ্বাস্য ডিসকাউন্টের ছড়াছড়ি। এসব ডিসকাউন্ট শুধু শপিং সাইটগুলোর পক্ষ থেকেই নয়, বিকাশ ও রকেট -এর মতো ডিজিটাল ওয়ালেট প্রতিষ্ঠানগুলোও আপনাকে অনলাইন কেনাকাটায় প্রদান করবে নানা ধরনের ক্যাশ ব্যাক অফার।
এবার আসা যাক অনলাইন শপিং -এর কিছু অসুবিধার বিষয়ে। সম্প্রতি, বেশ কিছু অনলাইন শপিং সাইটের প্রতারনার খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যা সাধারন মানুষের উপর অনলাইন শপিং নিয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মূলত, অসৎ কিছু ব্যবসায়ী ফেসবুক এবং শপিং ওয়েবসাইট মাধ্যমে ক্রেতাদের সাথে প্রতারনা করে আসছে। অর্থাৎ, অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললে ভুল হবে। এটি অনলাইন কেনাকাটার বড় রকমের একটি অসুবিধা। বেশ কিছু বড় শপিং সাইটের কাছেও প্রতারিত হওয়ার খবর সাধারন মানুষকে আরও বিমুখ করে তুলেছে। মানসম্মত প্রোডাক্ট পাওয়ার অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে অনলাইনে। এছাড়া, ঢাকা ব্যতীত দেশের অন্য শহর এবং গ্রামাঞ্চলে প্রোডাক্ট ডেলিভারি পেতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগে থাকে। যা অনলাইন শপিং -এর কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। এছাড়াও সরাসরি হাতে দেখে প্রোডাক্ট পছন্দ করা যায়না বলে এটি অনলাইন শপিং -এর সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা।
অফলাইন কেনাকাটার সুবিধা-অসুবিধা
অফলাইন অর্থাৎ মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটারও রয়েছে কিছু সুবিধা অসুবিধা। আপনার শহর বা এলাকার মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটায় সবচেয়ে বড় যে সুবিধাটি পাবেন তা হল, সরাসরি হাতে দেখে কেনার সুবিধা। অনেক দোকানে পাবেন, দাম-দর করেও কেনার সুবিধা। কিন্ত অধিকাংশ দোকানে নেই ডিজিটাল পেমেন্ট সুবিধা। পাবেন না অনলাইনের মতো লোভনীয় সব অফার আর ডিসকাউন্ট। প্রোডাক্ট ডেলিভারি সংক্রান্ত কোন বিষয় নেই। তাই সাথে সাথেই পেয়ে যাচ্ছেন প্রোডাক্ট। কিন্ত মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটার ক্ষেত্রে ব্যয় হবে আপনার মূল্যবান অনেক সময়।
লোকাল মার্কেটে শপিং করার আরেকটি অসুবিধা হল, নামীদামী ব্র্যান্ড কিংবা নির্দিষ্ট পছন্দের প্রোডাক্ট আপনি নাও পেতে পারেন। কারণ, লোকাল মার্কেটে নেই অনলাইনের মতো লাখ লাখ প্রোডাক্টের সহজলভ্যতা।
অনলাইনে ঈদের কেনাকাটা করার কিছু শপিং সাইটের ঠিকানা
দেশীয় অনলাইন শপিং সাইট এখন কয়েক শত। অনলাইন শপিং -এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণে অনেক উদ্যোক্তাই এখন এই ব্যবসা শুরু করছে। তাই অনলাইন শপিং সাইটের সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিদিন। শুধু ওয়েবসাইটের মাঝেই থেমে নেই অনলাইন শপিং, ফেসবুকেও এখন সমান তালে চলছে অনলাইন শপিং! ফেসবুকেও অনেক ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে তাঁদের অনলাইন ব্যবসা। তবে প্রতারনা এড়াতে চেস্টা করুন প্রতিষ্ঠিত যেকোন অনলাইন শপিং সাইট থেকেই কেনাকাটা করার। এমন কিছু দেশীয় অনলাইন শপিং সাইট হলঃ
- দারাজ – www.daraz.com.bd
- আজকের ডিল – www.ajkerdeal.com
- প্রিয়শপ – www.priyoshop.com
- বাগডুম – www.bagdoom.com
- বিডিশপ – www.bdshop.com
- অথবা ডট কম – www.othoba.com
- পিকাবু – www.pickaboo.com
- শাদমার্ট – www.shadmart.com
ঈদের কেনাকাটা হোক তবে এবার অনলাইনে!
অনেক তো হল যানজট আর মানুষের ভীড় ঠেলে মার্কেটে গিয়ে ঈদের কেনাকাটা। এবার নাহয় আপনার ঈদের কেনাকাটা শুরু হোক অনলাইনে। প্রতিদিন অসংখ্য ছাড়ে কিনে নিন পছন্দের জামা, ঘরের জিনিসপাতি কিংবা প্রিয়জনের জন্য সুন্দর কোন গিফট। তো, আর দেড়ি কেন? হয়ে যাক ঈদের অনলাইন কেনাকাটা।
It’s great that peoples are shopping from deshi e-commerce sites frequently. We have an e-commerce site https://www.bponon.com which is also good for shopping through internet. You can check the site.
Thanks Shah for your comment. Best wishes for your online shop.